বুধবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২০
পর্ব - নং ০৩ কিছু শুরু করার আগে গনেশ বন্দনা করার নিয়ম কে তৈরি করেছে এবং কেন ?
আমরা দ্বিতীয় পর্বে দেখাচ্ছি কোনো কিছু শুরু করার আগে গনেশ বন্দনা করার নিয়ম আছে , এখন প্রশ্নঃ হলো কে এই নিয়ম তৈরি করেছে এবং কেন ?
*****************************************
সোমবার, ৯ নভেম্বর, ২০২০
বেদ আলোচনা / Discuss the Vedas
আমরা গত ব্লগে দেখেছিলাম বেদ কি ?
এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো বেদ এবং বেদের শ্রেণিবিন্যাস।
বর্তমানে বেদের বিভাজন দুই ভাগে করা হয় যথা;-
- ব্যাবহারিক
- ও গাঠণিক
ব্যাবহারিক বিভাজন :-
ব্যাবহারিক বিভাজনগুলো যথাক্রমে
- ঋক,
- সাম,
- যজু্ঃ
- ও অথর্ব।
এর মধ্যে প্রথম তিনটি ঐতিহাসিক বৈদিক ধর্মের যজ্ঞ অনুষ্ঠান-সংক্রান্ত যথা ;-
- ঋগ্বেদ অংশে হোতার বা প্রধান পুরোহিত কর্তৃক পঠিত মন্ত্র সংকলিত হয়েছে।
- যজুর্বেদ অংশে অধ্বর্যু বা অনুষ্ঠাতা পুরোহিত কর্তৃক পঠিত মন্ত্র সংকলিত হয়েছে।
- সামবেদ অংশে উদ্গাতার বা মন্ত্রপাঠক পুরোহিত কর্তৃক গীত স্তোত্রগুলি সংকলিত হয়েছে।
- অথর্ববেদ অংশে মারণ, উচাটন, বশীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রগুলি সংকলিত হয়েছে।
ঋগ্বেদ ;-
পবিত্র ঋগ্বেদ হচ্ছে সবচেয়ে প্রাচীনতম বেদ এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ জীবিত ভারতীয় লেখা। এই গ্রন্থটি মূলত ১০টি পুস্তকে বিভক্ত যা ১,০২৮টি বৈদিক সংস্কৃত সূক্তের সমন্বয়। ঋগ্বেদে মোট ১০,৫৫২টি ‘ঋক’ বা ‘মন্ত্র’ রয়েছে।‘ঋক’ বা স্তুতি গানের সংকলন হল ঋগ্বেদ সংহিতা। ঈশ্বর, দেবতা ও প্রকৃতি বিষয়ক আলোচনা ঋগবেদে প্রাধান্য পেয়েছে।
যজুর্বেদ;-
যজুর্বেদ হল গদ্য মন্ত্রসমূহের বেদ। যজুর্বেদ বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত একটি প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ। যজ্ঞের আগুনে পুরোহিতের আহুতি দেওয়ার ও ব্যক্তিবিশেষের পালনীয় আচার-অনুষ্ঠানগুলির পদ্ধতি এই গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। যজুর্বেদ হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগ্রন্থ বেদের একটি ভাগ। ঠিক কোন শতাব্দীতে যজুর্বেদ সংকলিত হয়েছিল, তা জানা যায় না। তবে গবেষকদের মতে, আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ থেকে ১০০০ অব্দ নাগাদ, অর্থাৎ সামবেদ ও অথর্ববেদ সংকলনের সমসাময়িক কালে এই বেদও সংকলিত হয়।
সামবেদ;-
সামবেদ হল সংগীত ও মন্ত্রের বেদ।সামবেদ হিন্দুধর্মের সর্বপ্রধান ধর্মগ্রন্থ বেদের দ্বিতীয় ভাগ। এটি বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত। সামবেদে ১,৮৭৫টি মন্ত্র রয়েছে।এই শ্লোকগুলি মূলত বেদের প্রথম ভাগ ঋগ্বেদ থেকে গৃহীত।এটি একটি প্রার্থনামূলক ধর্মগ্রন্থ। বর্তমানে সামবেদের তিনটি শাখার অস্তিত্ব রয়েছে। এই বেদের একাধিক পাণ্ডুলিপি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে।গবেষকেরা সামবেদের আদি অংশটিকে ঋগ্বৈদিক যুগের সমসাময়িক বলে মনে করেন। তবে এই বেদের যে অংশটির অস্তিত্ব এখনও পর্যন্ত রয়েছে, সেটি বৈদিক সংস্কৃত ভাষার পরবর্তী-ঋগ্বৈদিক মন্ত্র পর্যায়ে রচিত। এই অংশের রচনাকাল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১২০০ থেকে ১০০০ অব্দের মাঝামাঝি কোনো এক সময়। তবে সামবেদ যজুর্বেদ ও অথর্ববেদের সমসাময়িক কালে রচিত।
অথর্ববেদ ;-
অথর্ববেদ হল হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মগ্রন্থ বেদের চতুর্থ ভাগ। ‘অথর্ববেদ’ শব্দটি সংস্কৃত ‘অথর্বণ’ ও ‘বেদ’ শব্দ-দু’টির সমষ্টি। অথর্ববেদ বৈদিক সাহিত্যের পরবর্তীকালীন সংযোজন। অথর্ববেদ বৈদিক সংস্কৃত ভাষায় রচিত। ২০টি খণ্ডে বিভক্ত এই গ্রন্থে ৭৩০টি স্তোত্র ও প্রায় ৬,০০০ মন্ত্র আছে। অথর্ববেদের এক-ষষ্ঠাংশ স্তোত্র ঋগ্বেদ থেকে সংকলিত। ১৫শ ও ১৬শ খণ্ড ব্যতীত এই গ্রন্থের স্তোত্রগুলি নানাপ্রকার বৈদিক ছন্দে রচিত।এই গ্রন্থের দুটি পৃথক শাখা রয়েছে। এগুলি হল পৈপ্পলাদ ও শৌনকীয়। এই শাখাদুটি আজও বর্তমান। মনে করা হয় যে, পৈপ্পলাদ শাখার নির্ভরযোগ্য পাণ্ডুলিপিগুলি হারিয়ে গিয়েছে। তবে ১৯৫৭ সালে ওড়িশা থেকে একগুচ্ছ সুসংরক্ষিত তালপাতার পাণ্ডুলিপি আবিষ্কৃত হয়।
প্রত্যেকটি বেদ আবার চারটি প্রধান ভাগে বিভক্ত।
যথা ;- বেদ আলোচনা
- সংহিতা (মন্ত্র ও আশীর্বচন),
- আরণ্যক (ধর্মীয় আচার, ধর্মীয় ক্রিয়াকর্ম, যজ্ঞ ও প্রতীকী যজ্ঞ),
- ব্রাহ্মণ (ধর্মীয় আচার, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও যজ্ঞাদির উপর টীকা)
- ও উপনিষদ্ (ধ্যান, দর্শন ও আধ্যাত্মিক জ্ঞান-সংক্রান্ত আলোচনা)
কোনও কোনও গবেষক উপাসনা (পূজা) নামে একটি পঞ্চম বিভাগের কথাও উল্লেখ করে থাকেন।
পতঞ্জলির মহাবৈশ্যের মতে, ঋগ্বেদের ২১টি শাখা আছে, অথর্ববেদের ৯টি শাখা আছে, যজুর্বেদের ১০১টি শাখা আছে, সামবেদের ১০০০টি শাখা আছে। অর্থাত্ বেদের সর্ব মট শাখা ১১৩১টি। এর মধ্যে মাত্র এক ডজন সহজলভ্য।
ii) ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ এবং সামবেদ অধিকতর প্রাচীন গ্রন্থ। এদের 'বিদ্যাত্রয়ী' বা 'বিজ্ঞানত্রয়ী' বলা হয়। এদের মধ্যে ঋগ্বেদ প্রাচীনতম। ঋগ্বেদ লিপিবদ্ধ করা হয় তিনটি দীর্ঘকালের ব্যবধানে। চতুর্থ বেদ হল অথর্ববেদ যা অপেক্ষাকৃত নবীন। ঋগ্বেদে আছে স্তুতি গান। যজুর্বেদে আছে আত্মত্যাগের নিয়মনীতি। সামবেদ সঙ্গীতমুখর। অথর্ববেদে আছে রোগ নিরাময়ের ফরমুলা।
iii) চারটি বেদ কখন লেখা হয়েছে সে-ব্যাপারে সর্বসম্মত কোনও মত নেই। আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ স্বামীর মতে, বেদ লেখা হয়েছিল কোটি কোটি বছর আগে।
বেদ ৪ টি- মন্ত্র সংখ্যা- ২০,৪৩৪
১.ঋগবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১০,৫৮৯
২.সামবেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ১,৮৯৩
৩.যজু:বেদ. মন্ত্র সংখ্যা- ১,৯৭৫
৪.অথর্ববেদ. মন্ত্রসংখ্যা- ৫,৯৭৭
উপবেদ ৪ টি.
১. আয়ুর্বেদ. ২.ধনুর্বেদ. ৩.গন্ধর্ববেদ. ৪.অর্থশাস্ত্র.
বেদাঙ্গ -৬ টি.
১.শিক্ষা- পাণিনী
২.কল্প- বিভিন্ন ঋষি সম্প্রদায়
৩.ব্যাকরণ- পাণিনী.
৪.নিরুক্ত- যাস্ক.
৫.ছন্দ- পিঙ্গলাচার্য.
৬.জ্যোতিষ- গর্ণ.
বেদের উপাঙ্গ-৪ টি.
১.পুরাণ. ২.মীমাংসা. ৩.ন্যায়. ৪.ধর্মশাস্ত্র
বেদের জ্ঞানকাণ্ড- ২ টি.
১.আরণ্যক. ২.উপনিষদ.
আরণ্যক - ৪ টি. ১.ঐতেরেয়. ২.কৌষীতকী ৩.শতপথ ব্রহ্মণ. ৪.ছান্দোগ্য
উপনিষদ -১২ টি.
১.বৃহদারণ্যক মন্ত্র- ৪৩৫.
২.ছান্দোগ মন্ত্র- ৬৬৮
৩.তৈত্তিরীয় মন্ত্র- ৬৮.
৪.ঐতরেয় মন্দ্র- ৩৩
৫.ঈশোপনিষ মন্ত্র- ১৮
৬.কেন উপনিষদ- ৩৫
৭.কঠো উপনিষদ- ১১৯.
৮.প্রশ্ন উপনিষদ- ৬৭
৯.মুণ্ডকোপনিষদ- ৬৫.
১০.মাণ্ডুক্যউপনিষদ- ১২
১১.শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ. মন্ত্র. - ১১৩.
১২.কৌষীতকী উপনিষদ মন্ত্র. - ৪৯.
ষড়_দর্শন -৬ টি.
১.সাংখ্যা দর্শন - মহর্ষি কপিল.
২.যোগ দর্শন- পাতঞ্জলি.
৩.ন্যায় দর্শন - গৌতম.
৪.বৈশেষিক দর্শন-কণাদ.
৫.পূর্ব মীমাংসা - জৈমিনী.
৬.উত্তর মীমাংসা বেদান্ত দর্শন- ব্যাসদেব.
মীমাংসা - ২ টি.
১.কর্ম মীমাংসা ২.ব্রহ্ম মীমাংস বা ব্রহ্মসূত্র.
স্মৃতি_সংহিতা (সমাজ ব্যবস্থাপক শাস্ত্র) ২০টি
১.মনু সংহিতা
২.অত্রি সংহিতা.
৩.বিষ্ণু সংহিতা.
৪.হরিত সংহিতা.
৫.যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা.
৬.পরাশর সংহিতা.
৭.ব্যাস সংহিতা.
৮.উশনা সংহিতা.
৯.অঙ্গিরা সংহিতা.
১০.যম সংহিতা.
১১.অপস্তম্ভ সংহিতা
১২.সম্বর্ত সংহিতা.
১৩.কাত্যায়ন সংহিতা.
১৪.বৃহস্পতি সংহিতা.
১৫.শঙ্খ সংহিতা
১৬.লিখিত সংহিতা.
১৭.দক্ষ সংহিতা.
১৮.গৌতম সংহিতা.
১৯.শতাতপ সংহিতা.
২০.বশিষ্ট সংহিতা.
পুরাণ হিন্দু ধর্মগ্রন্থ। 'পুরাণ' কথাটির অর্থ 'প্রাচীন'। পুরাণে আছে সৃষ্টির ইতিহাস, আর্যদের ইতিহাস, বিভিন্ন স্বর্গীয় আত্মার গল্প। বেদের ঠিক পরেই পুরাণের আবির্ভাব। মহর্ষি বৈশ্য পুরাণকে ১৮টি খণ্ডে বিভক্ত করেছিলেন। পুরাণের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ভবিষ্যপুরাণ। ভবিষ্যপুরাণের এই রকম নামকরণের কারণ হল এতে আছে ভবিষ্যতের নানান ঘটনাপ্রবাহের আগাম ইঙ্গিত বা ভবিষ্যদ্বাণী। ভবিষ্যপুরাণ স্বয়ং ঈশ্বরের বাণী, মহর্ষি বৈশ্য একে শুধু বিভিন্ন পর্বে বিভাজিত করেছিলেন।
পুরাণ - ২ টি.
১.মহাপুরাণ. ২.উপ-পুরাণ.
মহা_পুরাণ -১৮টি.
১.ব্রহ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখা-১০,০০০.
২.শিব পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০.
৩.পদ্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫৫,০০০.
৪.বিষ্ণু পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৩,০০০.
৫.ভাগবত মহাপুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮,০০০.
৬.মার্কণ্ডেয় পুনাণ মন্ত্রসংখ্যা-৯,০০০.
৭.অগ্নি পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৫,৪০০.
৮.ভবিষত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,৫০০.
৯.ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৮ ,০০০.
১০.মত্স পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৪,০০০.
১১.লিঙ্গ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১১,০০০.
১২.বরাহ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৪,০০০.
১৩.কুর্ম্ম পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৭,০০০.
১৪.গরুড় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১৯,০০০.
১৫.ব্রহ্মান্ড পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১২,০০০.
১৬.নারদীয় পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-২৫,০০০
১৭.স্কন্ধ পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-৮১,১০১.
১৮.বামন পুরাণ মন্ত্রসংখ্যা-১০,০০০.
রামায়ণ ও মহাভারত।
i) রামায়ণে আছে, রামচন্দ্রের কাহিনী। অধিকাংশ হিন্দু-ই এই কাহিনী সম্পর্কে অবগত।
ii) মহাভারত, যাতে আছে কৌরব ও পাণ্ডবের মধ্যকার সামন্ততান্ত্রিক জ্ঞাতি লড়াই। এতে কৃষ্ণের কাহিনীও সংযোজিত হয়েছে। মহাভারত সাধারণভাবে সমস্ত হিন্দুই জানেন।
দেবী_ভাগবত (শাক্ত সম্প্রদায়)
শ্রীমদ্ভাগবদ (বৈষ্ণব সম্প্রদায়)
চৈতন্যচরিতামৃত .
শ্রীমদ্ভাগবতগীতা মন্ত্রসংখ্যা-৭০০ শ্রেষ্ঠগ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবতগীতা হিন্দুদের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে পরিচিত ধর্মগ্রন্থ। এটি মহাভারতের অংশ। এতে ১৮টি অধ্যায় আছে। গীতা মূলত কৃষ্ণের উপদেশ যা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রদত্ত হয়েছিল অর্জুনের উদ্দেশে।
শ্রীশ্রীচণ্ডী .মন্ত্রসংখ্যা-৭০০
মার্কেণ্ডেয় পুরাণের ৮১ নম্বর অধ্যায় থেকে ৯৩ সংখ্যক অধ্যায়ে, দেবীমাহাত্ম্যের বর্ণনা আছে।ঐ ১৩টি অংশই 'শ্রীশ্রীচণ্ডী' ।ত্রয়োদশ অধ্যায়ে, 'চণ্ডী' বা দেবীমহামায়ার মাহাত্ম্য বর্ণনা পাওয়া যায়।
Dailyhunt
Disclaimer: This story is auto-aggregated by a computer program and has not been created or edited by Dailyhunt. Publisher: Aj Bangla TV
Related Stories
বেদ / Vedas
আমরা পূর্বেই আলোচনা করেছি আমাদের সমস্ত ধর্মীয় গ্রন্থ গুলিকে দুই ভাগে বিভক্ত করা হয় শ্রুতি শাস্ত্র ও স্মৃতি শাস্ত্র।
এই গ্রন্থগুলিতে আলোচনা হয়েছে। ধর্মতত্ত্ব, দর্শন ও পুরাণ এবং ধর্মানুশীলন সংক্রান্ত নানা তথ্য বিবৃত হয়েছে।
এই গ্রন্থগুলির মধ্যে বেদ সর্বপ্রাচীন, সর্বপ্রধান ও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।
আজ আমরা বেদ সমন্ধে আলোচনা করবো।
প্রথমেই জেনে নেবো বেদ কী ?
বেদ' শব্দটি এসেছে সংস্কৃত 'বিদ' ধাতু থেকে, যার অর্থ জানা। তাই 'বেদ' শব্দটির অর্থ 'সর্বোত্তম জ্ঞান'।
বেদকে চারভাগে ভাগ করা হয়।
যথা;-
- ঋক্,
- সাম,
- যজুঃ,
- অথর্ব।
- "আস্তিক" - আস্তিক হলো যারা বেদের প্রামাণ্যতা স্বীকার করে এবং বেদকেই তাদের শাস্ত্রের প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করে।
- "নাস্তিক" নাস্তিক হলো যারা বেদের প্রামাণ্যতা স্বীকৃত নয় বলে মনে করে।
যদি বর্তমান সময়ের পরিপেক্ষিতে আস্তিক অথবা নাস্তিক কথার আলোচনা করা হয় তবে যে নিষ্কর্ষ পাওয়া যাবে তা হলো , আমরা অথবা আমাদের প্রজন্ম কিছুই দেখিনি কিন্তু আমাদের ধর্ম গ্রন্থে যা উল্লেখ তা সম্পূর্ণই আমাদের পূর্ব পুরুষদের অভিজ্ঞাতার ভিত্তিতেই লিপিবদ্ধ হয়েছে।
তাই আমরা যদি আস্তিক এবং নাস্তিক বিতর্ক ছেড়ে আমাদের ধর্ম গ্রন্থের জ্ঞান আয়ত্ব করি তাহলে আমাদের জীবন পথ সম্পূর্ণ রূপে সুগম ও সমৃদ্ধশালী হয়েউঠবে।
কেননা হাজার হাজার বছর ধরে হাজারো বিতর্কের মধ্যে অস্তিতে রয়েছে তাতে নিশ্চয় কোনো না কোনো ক্ষমতা নিশ্চয় রয়েছে।
যা সমন্ধে আমরা পরের ব্লগ বেদ আলোচনাতে দেখবো , এত সময় সঙ্গে দেবার জন্য ধন্যবাদ।
শ্রুতি শাস্ত্র ও স্মৃতি শাস্ত্র / Shruti Shastra and Smriti Shastra
আমি পূর্বেই উল্লেখ করেছি আমাদের হিন্দু ধর্ম গ্রন্থের কোনো একক প্রতিষ্ঠাতা নাই অনাদি কাল থেকে পরম্পরা ক্রমে চলে আসছে। হিন্দুধর্মকে বিশ্বের 'প্রাচীনতম জীবিত ধর্মবিশ্বাস' বা 'প্রাচীনতম জীবিত প্রধান মতবাদ' বলে আখ্যা দেওয়া হয়।
হিন্দু ধর্ম গ্রন্থকে প্রধান দুই ভাগে শ্রীনি বিন্যাস করা হয়
- শ্রুতি শাস্ত্র
- স্মৃতি শাস্ত্র
শ্রুতি : 'শ্রুতি' শব্দের অর্থ— যা শ্রবণ করা যায় এবং যা উপলব্ধি করা যায়। শ্রুতি সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ। শ্রুতিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
যথা :-
- বেদ,
- উপনিষদ।
এখন প্রশ্নঃ আশে স্মৃতি শাস্ত্র কি ?
স্মৃতি : 'স্মৃতি' শব্দের অর্থ যা মনে রাখা হয়। শ্রুতির মত স্মৃতি অত প্রাচীন গ্রন্থ নয়। 'স্মৃতি'কে ঐশীগ্রন্থ হিসেবেও বিবেচনা করা হয় না।
তবুও আজ হিন্দুদের মধ্যে 'স্মৃতি' সবচেয়ে জনপ্রিয়। 'স্মৃতি' মানুষের লেখা। স্মৃতির মধ্যে উল্লেখ আছে
- হিন্দুর জীবনবিধান
- ও ধর্মাচরণের পদ্ধতি লিপিবদ্ধ আছে।
যথা;-
- পুরাণ
- ও মহাকাব্য।
মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর, ২০২০
Hinduism / হিন্দু ধর্ম
হিন্দুধর্মকে সনাতন ধর্ম ও বলা হয়ে থাকে , " সনাতন ধর্ম " কথার অর্থ হলো তিহ্যবাহী ধর্ম যা হিন্দু ধর্মাবলম্বীগণ স্বীয় ধর্মমতকে সনাতন ধর্ম বলে থাকেন ।
হিন্দুধর্ম আজ প্ৰায় সারা পৃথিবীব্যাপী সরিয়ে আছে । এই ধর্মের কোনো একক প্রতিষ্ঠাতা নেই। অনাদি কাল থেকে এই পরম্পরা চলে আসছে। হিন্দুধর্মকে বলা হয় পৃথিবীর প্রাচীনতম ধর্ম। কারণ এটি প্রাচীনযুগে আর্বিভূত হয়েছে।এবং ধর্মাবলম্বীরা একে সনাতন ধর্ম বা চিরন্তন পথ বলে থাকে।
আলোচকেরা হিন্দুধর্মকে বিভিন্ন ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ এবং সংশ্লেষণ হিসেবে গন্য করেন, যার মূলে বহু ব্যাক্তিত্ব এবং একাধিক উৎপত্তি উৎস রয়েছে।
এটি সনাতনি বা চিরন্তন কর্তব্যের কথা যেমন
- সততা,
- অহিংসা,
- ধৈর্যশীলতা,
- সমবেদনা
- ও আত্মনিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আরো অনেক মানবিক উতৃকৃষ্ট উপায়ের কথা বলা হয়েছে।
- এবং বাহ্যিক আচার বিচারের থেকে পরম সত্যের জ্ঞানকে সর্বদাই মুখ্য স্থান দাওয়া হয়েছে।
- ধর্ম
- অর্থ
- কাম
- মোক্ষ
কেউ কেউ সমাজ ও সভ্য জগতে পার্থিব সুখ ছেড়ে পারমার্থিক শান্তির আশায় ও মোক্ষ লাভের উদ্দেশ্যে সন্ন্যাস গ্রহণ করে।
হিন্দুধর্মের শাস্ত্রগ্রন্থের সংখ্যা প্রচুর যাহাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
- শ্রুতি শাস্ত্র
- ও স্মৃতি শাস্ত্র
- ধর্মতত্ত্ব,
- দর্শন
- ও পুরাণ
- এবং ধর্মানুশীলন সংক্রান্ত নানা তথ্য বিবৃত হয়েছে।
- উপনিষদ্,
- পুরাণ,
- ও ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ ও মহাভারত।
Religion / ধৰ্ম
প্রথমেই বলেছি আমাদের পূর্ব পুরষদের জীবন অভিজ্ঞাতার ভিত্তিতে জীবন চার্চার পথনির্দেশিকা তৈরি কোরেছিলেন যাকে আমরা ধর্ম গ্রন্থ বলে থাকি।
এখন মনে প্রশ্ন জগতে পারে ধর্ম কি ?
ধর্ম শব্দটি আসে সংস্কৃত √ধৃ হতে। এই √ধৃ -এর অর্থ 'ধারণ'। 'একজন ব্যক্তি তার জীবনে তার যত প্রকার বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে সব মিলিয়ে হয় তার ধর্ম।' তার বিশ্বাস, তার পরম্পরাগত শিক্ষা, তারা আচার ব্যবহার ইত্যাদি এই সবই তার ধর্ম। যেভাবে আগুনের ধর্ম পুড়িয়ে দাওয়া , জলের ধর্ম শীতল করা , পশুর ধর্ম পশুত্ব, তেমনি মানুষের ধর্ম হয় মনুষত্ব।
আমার এখানে অন্যান্য সব গুলি উদাহরণ গুলি বুঝতে পারছি যেমন আগুন এর ধর্ম পুড়িয়ে দাওয়া , জালের ধর্ম শীতল করা, পশুর ধর্ম পশুত্ব কিন্তু মানুষের ধর্ম মানুষত্ব কি ?
আমাদের ধর্ম গ্রন্থে এই কথাই উল্লেখ আছে মানুষএর মানুষত্ব কি ?
এই প্রশ্নের উত্তর জানতে আপনাকে আমার এই ব্লগের সঙ্গে থাকতে হবে আমার শেষ ব্লগ প্রজন্ত যা আমি প্রতিদিন আকর্ষিত ভাবায় আপনাদের কাছে তুলায়দাবার চেষ্টা করবো ।.
সংক্ষেপে যদি আপনি জানতে চান তবে বলবো যাহার মাধ্যমে আমাদের এবং ভবিষৎ প্রজন্ম কোনো ক্ষতি না হয় তাকাই মানুষত্ব বলা যাতে পারে। কিন্তু এ কথা বলে রাখা ভাল যে একটি বাক্য দ্বারা কখনই মানুষত্ব শব্দের অর্থ প্রকাশ করা সম্ভব নয় ।
আরো একটা কথা বলে রাখিছি এ পৃথিবীর বিভিন্ন এস্থানে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষ বসবাস করে তারা তাদের সেই এস্থানে ভিন্ন ভিন্ন ধারণার ধর্ম গ্রন্থ তৈরি করেছে যেমন :
১. ইব্রাহামীয় ধর্মসমূহ
- ইসলাম ধর্ম
- খ্রিস্ট ধর্ম
- ইহুদি ধর্ম
- বাহাই ধর্ম
- হিন্দু ধর্ম
- শিখ ধর্ম
- বৌদ্ধধর্ম
- জৈন ধর্ম
- কনফুসীয় ধর্ম
- শিন্তো ধর্ম
- তাও ধর্ম
- ধর্ম কাকে বলে /
- মানব ধর্ম বা মানুষত্ব কি ?
- পৃথিবীর প্রধান ধর্ম গুলির নাম কি কি ?
সোমবার, ২ নভেম্বর, ২০২০
পর্ব - নং ০২- গণেশ বন্দনা [Ganesha worship ]
যেকোনো কাজ শুরু করার আগে গনেশ বন্দনা করার নিয়ম আছে , তাই আজ গনেশ বন্দনা দিয়েই শুরু করছি।
গণেশ পূজা মন্ত্র:
একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদর গজাননম।
বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং পনমাম্যহম।।
ধ্যান মন্ত্র:
ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং
প্রস্যন্দম্মদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোলগণ্ডস্থলম্।
দন্তাঘাত বিদারিতারিরুধিরৈঃ সিন্দুরশোভাকরং,
বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্।।
গণেশ বন্দনা:
বন্দ দেব গজানন বিঘ্ন বিনাশন।
নমঃ প্রভু মহাকায় মহেশ নন্দন।।
সর্ববিঘ্ন নাশ হয় তোমার শরণে।
অগ্রেতে তোমার পূজা করিনু যতনে।।
নমো নমো লম্বোদর নমঃ গণপতি।
মাতা যার আদ্যাশক্তি দেবী ভগবতী।।
সর্বদেব গণনায় অগ্রে যার স্থান।
বিধি-বিষ্ণু মহেশ্বর আর দেবগণ।।
ত্রিনয়নী তারার বন্দিনু শ্রীচরণ।
বেদমাতা সরস্বতীর লইনু শরণ।।
মন্ত্রঃ – ওঁ গাং গণেশায় নমঃ।
এই ব্লগে আর অন্য কিছু লিখিছি না শুধু গনেশ বন্দনা করেই সমাপ্ত করছি। আমার এই প্রচেষ্টা কেমন লাগলো কমেন্ট আর মাধ্যমে জানাবেন কোনো ত্রুটি থাকে থাকলে আমি তা সমাধানের চেষ্টা করবো
পর্ব - নং ০৬ সর্গ বলতে কি বোঝায় ?
যেমনটা আমি পঞ্চম পর্বে প্রতিশ্রুতি দিয়েচলাম সর্গ , নরক এবং পাতাল সমন্ধে আলোচনা করবো বলে , প্রথমেই আলোচনা করবো সর্গ সমন্ধে। সর্গ বলতে কি...
-
আমি পূর্বেই উল্লেখ করেছি আমাদের হিন্দু ধর্ম গ্রন্থের কোনো একক প্রতিষ্ঠাতা নাই অনাদি কাল থেকে পরম্পরা ক্রমে চলে আসছে। হিন্দুধর্মকে বিশ্বের ...
-
আমরা গত ব্লগে দেখেছিলাম বেদ কি ? এই ব্লগে আমরা আলোচনা করবো বেদ এবং বেদের শ্রেণিবিন্যাস। বর্তমানে বেদের বিভাজন দুই ভাগে করা হয় যথা;- ব...
-
যেমনটা আমি পঞ্চম পর্বে প্রতিশ্রুতি দিয়েচলাম সর্গ , নরক এবং পাতাল সমন্ধে আলোচনা করবো বলে , প্রথমেই আলোচনা করবো সর্গ সমন্ধে। সর্গ বলতে কি...